নদী ও জীবন


তবে কি নদীই জীবনের ধারা? পাহাড়ের জরায়ু ছেঁড়া বুকের মানিক নুড়িপাথরে হামাগুড়ি দিতে দিতে স্রোতের কাঁপন। সূর্য প্রণয়ে ভাসে, জোছনা মিলনে হাসে- ধারাপাত গুনে চলে পাল তোলা মাঝির উজান। যেখানে শুরু সেখানে জানাব জন্ম কতটা জলের কতটা আদলের আর কতটা জীবন বদলের। দেহের গভীরে যাবতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ে জীবনের কিনারে, থেমে যাবে কি যাবে না, ফিরে পাবে কি পাবে না- যতিচিহ্নের এপার-ওপার রহস্যের কায়া, পলির মায়া জড়ানো সমতট। ফেলে যাওয়া পদচিহ্ন ঢেরা দেয়া মোষের মতন উঁকি মারে বুকের  বদ্বীপে।

আমি তো জলের বুকে ওম নেয়া জলপুত্র। পাহাড়ের নীরবতায় দিব্যচোখে দেখি; নুড়ির ঘর্ষণে সাগরের বুকে জ্বলে ওঠা আগুন নিয়ে ঘুরেফিরে সন্ধান করি অগ্নি প্রশমন সূত্র। দৌড়াই...। তারপর জলের টান... শীতের মদিরা কুয়াশা, বৈশাখের পোড়া রোদ আর বসন্তের অনন্ত মায়াবী সোপান। 


একটু... আরও একটু বেশি দাও যা দেয়ার। ফিরায়ো না...। স্রোতের টানে উন্মাদনার বয়ান। আমারে নিয়ো লগে উজানটিয়ার বনে তার সনে গোপনে জ্বালাব পিদিম যেথায় জ্বলে-নেভে উজান-ভাটায়। ঘাটে ঘাটে জীবনপাঠে বয়ার নাচন। কূল ডাকে- ভুলেও থাকি; ভাসাই জীবন চোখের ভুবন দরিয়ানগর। জলের জালে বুকের পালে তারার কাঁপন, দাগ দিয়ে যাই হৃৎপিন্ডে মনের মাপন।

এক ফোঁটা এই চোখের জলে নুন সাগরের কী হবে? দিন চলে যায়, মন ফিরে চায় আমার আশায় কে রবে? এই তো চলে জলের কোলে জীবন মাপি অতলে সোনাদিয়ার শাদা বালি ভরা রোদে বুকে জ্বালি, তবুও বলি ভালোবাসি...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন